বিষয় ও আসনসংখ্যা
সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা এই ইনস্টিটিউটগুলোতে যেসব বিষয়ে পড়নো হয়, সেগুলো হলো: আর্কিটেকচার, অটোমোবাইল, কেমিক্যাল, সিভিল, সিভিল (উড), কম্পিউটার, ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস, ফুড, পাওয়ার, মেকানিক্যাল, প্রিন্টিং, গ্রাফিক ডিজাইন, গ্লাস, সিরামিক, ইলেকট্রো-মেডিক্যাল, মেরিন, শিপবিল্ডিং, সার্ভেয়িং, মেকাটনিকস, কনস্ট্রাকশন, টেলিকমিউনিকেশন, এনভায়রনমেন্টাল, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, আর্কিটেকচার অ্যান্ড ইন্টেরিয়র ডিজাইন, গার্মেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং, ইনস্ট্রুমেন্টেশন অ্যান্ড প্রসেস কন্ট্রোল, ডেটা টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্ড নেটওয়ার্কিং, এয়ার ক্রাফট মেইনটেন্যান্সে ইঞ্জিনিয়ারিং (এরোস্পেস), এয়ার ক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ারিং (এভিয়োনিকস) এবং মাইনিং অ্যান্ড মাইন সার্ভে টেকনোলজি। চার বছরে মোট আটটি সেমিস্টারে পাঠদান করা হয়ে থাকে। আসনসংখ্যা ৪০ থেকে ১৬০টি পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে অতিরিক্ত আরও ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়।
ভর্তির যোগ্যতা
চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে আবেদন করতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই এসএসসি পাস হতে হবে। আবেদনপত্র সংগ্রহের সর্বনিম্ন যোগ্যতা জিপিএ-৩। সেই সঙ্গে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীকে সাধারণ গণিত অথবা উচ্চতর গণিতে জিপিএ-৩ থাকতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগ ছাড়া অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাধারণ বিজ্ঞান বা সাধারণ গণিতে জিপিএ-৩ থাকতে হবে। এই ইনস্টিটিউটগুলোয় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে দুই শিফটে। প্রথম শিফটে আবেদন করতে পারবে চলতি বছর এবং পূর্ববর্তী দুই বছরে পাস করা শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় শিফটে যেকোনো বর্ষে পাস করা শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবে। এরপর ভর্তি পরীক্ষা হবে মোট ১০০ নম্বরের, যেখানে ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা ও ৫০ স্কোর। লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো হবে বাংলা ও ইংরেজি থেকে ১৫ নম্বর, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন থেকে ১৫ নম্বর, গণিত থেকে ১৫ নম্বর এবং সাধারণ জ্ঞান ৫ নম্বরের। এসএসসির জিপিএকে ১০ দ্বারা গুণ করে প্রাপ্ত স্কোরের সঙ্গে লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে মেধাতালিকা প্রণয়ন করা হয়।
সুযোগ রয়েছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের চাহিদা বেশি, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং। বিস্তৃত কর্মক্ষেত্র বিবেচনা করে পড়া যেতে পারে টেক্সটাইল ডিপ্লোমায়। টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, পুলহাট, দিনাজপুর; টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট সিএন্ডবি রোড, বরিশাল; টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, বাজিতপুর, ময়মনসিংহ; এই তিনটি সরকারি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট আছে। প্রতিটি ইনস্টিটিউটে আসন আছে ৮০টি এবং বেসরকারি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে আছে ২১টি। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে অনলাইনের মাধ্যমে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর মতো একই পদ্ধতিতে ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে। ইনস্টিটিউটগুলো থেকে ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যাবে বাংলাদেশ টেক্সটাইল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কৃষি প্রকৌশলী হতে
কৃষিক্ষেত্রে আধুনিকায়নের নিমিত্তে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোয় চালু আছে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স। কারিগরি শিক্ষা বোডের্র অধীনে রংপুর, গাইবান্ধা, পাবনা, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, ঢাকা, গাজীপুর, শেরপুর, সিলেট, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও রাঙামাটি জেলায় একটি করে মোট ১৩টি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আছে। ইনস্টিটিউটভেদে আসনসংখ্যা ১০০ থেকে ২৫০ পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করতে হলে প্রার্থীকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৩ অথবা বিজ্ঞান বিভাগ ছাড়া অন্য বিভাগের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত বা সাধারণ বিজ্ঞানে গ্রেড পয়েন্ট-২সহ (জিপি) কমপক্ষে জিপিএ-৩ থাকতে হবে। কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের উপসহকারী পরিচালক পদে ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে নিযুক্ত হওয়া যাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন, ধান গবেষণাকেন্দ্র, মৃত্তিকা গবেষণাকেন্দ্র এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ে রয়েছে কাজের সুযোগ। সেই সঙ্গে সুযোগ রয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার।
ডিপ্লোমা ইন হেলথ টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস
তিন বছর মেয়াদি এই কোর্স বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধিভুক্ত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৯টি। যেগুলো ছড়িয়ে আছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব বিষয় পড়ানো হয়, সেগুলো হলো: ডেন্টাল, পেশেন্ট কেয়ার, ফিজিওথেরাপি, ফার্মা, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং, ইন্টিগ্রেটেড ও ল্যাবরেটরি টেকনোলজি। ভর্তির যোগ্যতা: এসএসাসিতে সাধারণ গণিত বা উচ্চতর গণিতে গ্রেড পয়েন্ট ২সহ (অথবা ৪০ শতাংশ নম্বর) কমপক্ষে জিপিএ-২ (অথবা দ্বিতীয় বিভাগ)। উল্লেখ্য, এখানে যেকোনো বর্ষে পাস করা শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবে। এ ছাড়া, চট্টগ্রামে রয়েছে একটি ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউট। আসনসংখ্যা ৫০টি। যারা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৩ পাবে, তারা আবেদন করতে পারবে।
উচ্চশিক্ষার আরও সুযোগ
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলো থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স সম্পন্ন করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য ভর্তি হওয়ার সুযোগ আছে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), অ্যাসোসিয়েট মেম্বার অব দ্য ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্সসহ (এএমআইই) দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ ছাড়া রয়েছে বিদেশেও পড়াশোনার সুযোগ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বাড়ছে কর্মক্ষেত্র ও কাজের পরিধি। বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারদের বেশির ভাগই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। প্রতিবছর বেশ কিছু ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার চাকরির সুবাদে যাচ্ছেন ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয়।
ভর্তি তথ্য
এসএসসির ফলাফল প্রকাশের পরপরই ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হতে চাইলে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। ভর্তিসংক্রান্ত সব তথ্যের জন্য যোগাযোগ করা যাবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট www.bteb.govt.bd-এ।
 
No comments:
Post a Comment